দেশের ১৯টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) কোম্পানির কাছ থেকে বকেয়া আদায়ে ব্যান্ডউইডথ সেবা ‘ডাউন’ (সীমিত) করে দিয়েছে সাবমেরিন কেবল কোম্পানি। এতে দেশের গ্রাহকদের অনেকে ধীরগতির ইন্টারনেট–সেবার মুখে পড়েছেন। ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আগামী মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি)।
এ বিষয়ে আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্য সচিব মাহমুদ সাহেদ জানিয়েছেন, ১৯টির মধ্যে ৪ ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটর বকেয়া পরিশোধ করায় ডাউন হওয়া ৫৭২ জিবিপিএস এর মধ্যে ২৫০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আপ হয়েছে।
বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ এলাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে উল্লেখ করে সদস্য সচিব জানান, তবে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারে ভোগান্তির মুখে পড়েছেন সারা দেশের গ্রাহকরা। ইন্টারনেট পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় লাগবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের এমডি শাহ কামাল আহমেদ বলেন, বকেয়া ৩৮৪ কোটি টাকার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে একটি অপারেটর। ২৫০ জিবিপিএস নয়, ১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আপ করা হয়েছে। এখনও ডাউন আছে ৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ।
এর আগে বকেয়া আদায় করতে না পেরে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাত ১২টার পর বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) ৫০০ জিবিপিএস (গিগাবিট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ সীমিত করে দেয়। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানায় সাবমেরিন কেবল কোম্পানি। এ সময় জানানো হয়, সাপ্তাহিক ছুটির কারণে রোববারের (২৬ নভেম্বর) আগে চলমান সমস্যার সমাধান হবে না।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা ১৯টি আইআইজি প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ডউইডথ সীমিত করে রেখেছে। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৩৪টি আইআইজি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বিএসসিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল আহম্মদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া পরিশোধ না করায় ওপর মহলের নির্দেশে ব্যান্ডউইডথ বন্ধ করা হয়েছে। কোম্পানিগুলোর কাছে অনেকবার বকেয়া চাওয়া হয়েছে। তারা দেয়নি। গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা টাকা আদায় করে। সরকারকে রাজস্ব কেন দেবে না?
মির্জা কামাল আরও বলেন, বৃহস্পতিবার ব্যান্ডউইডথ বন্ধ করে সঙ্গে সঙ্গেই কোম্পানিগুলোকে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, আইআইজিদের কাছ থেকে পাওনা আদায়ে গত ১৩ জুলাই বিএসসিপিএলসি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দেয়। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ৯ আগস্ট বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দেয়। সেখানে বলা হয়, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত আইপিলসি ও আইপি ট্রানজিট সেবা বাবদ বর্তমানে বিভিন্ন অপারেটরের কাছে সাবমেরিন কেবল কোম্পানির বকেয়ার পরিমাণ ৩৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯টি অপারেটরের কাছেই তারা পায় ১৮১ কোটি টাকা।